আবার জাগবে রেষ্টুরেন্ট পাড়া

 
– ২১ জুন উঠে যাবে সকল বিধি-নিষেধ   – আবার ৫ বিলিয়ন পাউন্ডের অনুদান   – ফারলোর সময়সীমা বাড়লো  – ৫ পারসেন্ট ভিএটি থাকবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনার আঁধার কাটতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যে করোনার টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে এগিয়ে চলার পাশাপাশি সংক্রমণ এবং মৃত্যু কমতে থাকায় আশার আলো জেগে উঠছে দিকে দিকে। বিশেষ করে রেষ্টুরেন্ট সহ হসপিটালিটি সেক্টরের ব্যবসাগুলো আবার স্বাভাবিক নিয়মে দ্রুত ব্যবসা চালু করতে পারবে। সরকার ২১ জুনের মধ্যে সকল বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। এমন ঘোষণার পাশাপাশি চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার রিশি সোনাক ৩রা মার্চ বাজেটে আরও নতুন প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এনিয়ে সরকারের কভিড ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০০ বিলিয়ন পাউন্ডে। হসপিটালিটি খাতের ব্যবসায়ীদের আশার আলোয় বাড়তি জ্যোতি যোগ করেছে ৫ বিলিয়ন পাউন্ডের রিস্টার্ট গ্রান্টের ঘোষণা। পুনরায় ব্যবসা চালু করার জন্য এ প্রণোদনা পাবেন ব্যবসায়ীরা। রিশি সোনাকের এই প্যাকেজ আবারো গত বছরের মতো হাই ষ্ট্রীটের ব্যবসাগুলোকে সাহায্য করবে।
যুক্তরাজ্যে গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া করোনার ভয়াল থাবা কেড়ে নিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ। অন্যান্য কমিউনিটির চেয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষ সবচেয়ে করুণ অবস্থা। হারিয়েছি কারি ইন্ডাষ্ট্রির অনেক চেনা মুখকে। কভিড -১৯ ধস নামিয়ে দিয়েছে অনেক ব্যবসা-বাণিজ্যে। সরকারের পর্যালোচনা অনুযায়ী করোনার কারণে যুক্তরাজ্যে যেসব ব্যবসা খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো রেষ্টুরেন্ট সহ পুরো হসপিটালিটি সেক্টর। দফায় দফায় লকডাউন আর নানা বিধি-নিষেধের কারণে গত প্রায় এক বছর যাবত প্রায় বন্ধ অবস্থায় রয়েছে যুক্তরাজ্যের রেষ্টুরেন্ট সহ হসপিটালিটি সেক্টর। টেকওয়ের জন্য রেষ্টুরেন্ট গুলো খোলা রাখার সুযোগ থাকলেও তা ব্যবসায় টিকে থাকার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। তবে কেউ কেউ আবার এও অভিমত প্রকাশ করেছেন সরকার ভিএটি পাঁচ পারসেন্ট করা সহ সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে তা অনেক ব্যবসাকে কষ্ট হলেও বাঁচিয়ে রেখেছে। এই সহযোগিতা না হলে ব্যবসা পাতি অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যেত।
কারি লাইফের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মাসের পর মাস বন্ধ থাকার কারণে কিছু কিছু রেষ্টুরেন্ট মালিক ইতিমধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন বা অলটারনেটিভ খুঁজছেন কিভাবে অন্য কিছু করা যায়। অনেকেই বলেছেন শীঘ্রই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার দ্বার প্রান্তে। অবশেষে সরকারী ঘোষণার পর বলা যায় রেষ্টুরেন্ট মালিক এবং ভোজনরসিকদের অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে অচিরেই। ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ এপ্রিল থেকে আবার জেগে উঠবে পাব ও রেষ্টুরেন্ট পাড়া। তারপরেও শর্ত আছে শুধুমাত্র রেষ্টুরেন্টের বাইরে খাবার সার্ভ করা যাবে। বেশিরভাগ ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট এর বসার স্থান না থাকায় এটা কারি ইন্ডাষ্ট্রির জন্য তেমনটি প্রযোজ্য নয়, তারা শুধুমাত্র টেকওয়ে নিয়েই আপাতত ব্যবসা চালু রাখবেন। তাদেরকে ১৭ মে থেকে নতুন নিয়ম কানুন মেনে কাস্টামারের জন্য দরজা খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো ২১ জুন থেকে উঠে যাবে সকল বিধি-নিষেধ।
সরকার জুলাই মাসের মধ্যে ১৮ বছরের বেশি সকলকে করোনার টিকাদান শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেড় কোটি মানুষকে টিকাদেয়ার লক্ষ্য সফলভাবে সম্পন্ন করার পর এমন উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বরিস জনসনের সরকার। সরকার বলছে, যুক্তরাজ্যে টিকাদান কর্মসূচির সফলতা ধরে রাখতে পারলেই জুলাইয়ের মধ্যে সকলকে টিকাদান সম্পন্ন হবে।

রেষ্টুরেন্ট এবং পাবগুলো কখন খুলছে?

–  করোনার টিকা প্রয়োগের অগ্রগতির পাশাপাশি করোনার প্রদুর্ভাব কমে আসার ফলে লকডাউন তুলে নেয়ার মত ইতিবাচক দিকে এগুচ্ছে পরিস্থিতি। যে কারণে সরকার পরিস্থিতির অগ্রগতি সাপেক্ষে ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ এপ্রিল হসপিটালিটি সেক্টর পুনরায় চালু হবে। এদিন থেকে রেষ্টুরেন্ট এবং পাব গার্ডেনে অর্থাৎ বাইরে কাস্টমারদের খাবার বা পানীয় সার্ভ করতে পারবে। ভিন্ন পরিবারের ৬ জন পর্যন্ত কাস্টোমার একসঙ্গে খেতে যেতে পারবেন। আর দুই পরিবারের যে কোনো সংখ্যার সদস্য একত্রিত হতে পারবেন।
– এরপর ১৭ মে থেকে রেস্টুরেন্ট এবং পাবগুলো ইনডোরে কাস্টোমারদের খাবার পরিবেশন করতে পারবে। এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পরিবারের ৬ জন এবং দুই পরিবারের যে কোনো সংখ্যার সদস্য একত্রিত হওয়ার নিয়ম বহাল থাকবে। এদিন থেকে আউটডোরে বড় গ্রুপকে খাবার পরিবেশন করা যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে গ্রুপে সদস্য সংখ্যা যাতে ৩০ জনের বেশি না হয়।
– এরপর ২১ জুন থেকে উঠে যাবে সকল বিধি-নিষেধ। তখন হসপিটালি সেক্টর তাদের ব্যস্ত-জমজমাট স্বাভাবিক রূপ ফিরে পাবে বলে প্রত্যাশা।

৫ বিলিয়ন পাউন্ডের ‘রিস্টার্ট গ্রান্ট’

লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে রেষ্টুরেন্ট এবং পাবগুলো। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সবচেয়ে ক্ষতির শিকার ব্যবসাগুলো পুনরায় চালু করতে সহায়তার জন্য সরকার ৫ বিলিয়ন পাউন্ড অনুদান বরাদ্দ করেছে। এ অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কারণেই আলাদা গুরুত্ব পাবে রেস্টুরেন্টগুলো। ঘোষণা অনুযায়ী দুইটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এই রিস্টার্ট গ্রান্ট পাবে। রেস্টুরেন্ট, পাব সহ নি¤œ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিটি প্রিমিসেস ৬ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত গ্রান্ট পাবে। আর হোটেল, জিম এবং হেয়ারড্রেসার সহ উচ্চ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলো ১৮ হাজার পাউন্ড পর্যন্তন্ত এ গ্রান্ট পাবে।
সরকারী হিসাবে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্চতর ব্যান্ডের গ্রান্টের জন্য যোগ্য হবে। এর পাশাপাশি অন্তত ৪ লাখ ৫০ হাজার দোকানপাট এই গ্রান্টের জন্য আবেদন করতে পারবে বলে ধারণা করছে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। ব্যবসাগুলোর রেইটএবল ভেল্যুর ওপর নির্ভর করবে ব্যান্ড।
এই গ্রান্ট বিলির দায়িত্বে থাকবে কাউন্সিল বা লোকাল অথোরিটিগুলো। এপ্রিল থেকে লোকাল অথোরিটিগুলো সরকারী এই অনুদানের অর্থ পাবে। তখন থেকেই এর বিরতণও শুরু হবে।
চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক বলেন, ‘আমাদের লোকাল বিজনেসগুলো করোনা লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। যে কারণে লকডাউন তোলার পর যাতে আমাদের হাইষ্ট্রীটের ব্যবসাগুলো আবার চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে সেজন্য আর্থিক প্রণোদনার এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

লকডাউন তোলার পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ

৮ মার্চ
লকডাউন তোলার প্রথম ধাপে ৮ মার্চ থেকে স্কুল খোলা হয়েছে এবং ২৯ মার্চ আরো কিছু নিয়ম শিথীল করা হবে। প্রথম পর্বে স্কুল খুলে দেয়া হওয়ায় ছেলেমেয়েরা উপস্থিত হতে পারছেন।। কেয়ারহোমগুলোতে থাকা স্বজনদের দেখতে যেতে পারছেন পরিবারের একজন সদস্য। বিয়ের অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৬ জনের উপস্থিতির নিয়ম বহাল রয়েছে। তবে অনুমোদন দেয়া প্রতিটি কাজে যুক্ত হতে গেলে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক।

২৯ মার্চ
প্রথম ধাপের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ২৯ মার্চ। এদিন থেকে দুই পরিবারের সদস্য বা সর্বোচ্চ ৬ জন ব্যক্তি বাইরে সাক্ষ্তা ও আড্ডা দিতে পারবেন। নিজেদের গার্ডেনেও তারা একত্রিত হতে পারবেন। এদিন থেকে ঘরে থাকার নিয়ম বাতিল হবে। তবে মানুষকে নিজ নিজ এলাকায় থাকার পরমর্শ অব্যাহত থাকবে। টেনিস এবং বাস্কেটবল সহ আউটডোর স্পোর্টস সেন্টারগুলো চালু হবে। বাইরে আনুষ্ঠানিক ক্রীড়ার আয়োজনও করা যাবে। প্যারেন্টস এবং চিলড্রেন গ্রুপের কার্যক্রম চালু হবে। তবে সর্বোচ্চ ১৫ জন একত্রিত হওয়া যাবে। কেবল বাইরে। আর ঝুঁকিপূর্ণ শিশু ও অভিভাবকরা ইনডোরে একত্রিত হতে পারবেন।

১২ এপ্রিল
লকডাউন তোলার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে ১২ এপ্রিল। এ ধাপে সবগুলো দোকানপাট খোলার অনুমোদন পাবে। রেষ্টুরেন্ট এবং পাব গার্ডেনে খাবার সার্ভ করতে পারবে। জিম এবং স্পা সেন্টারগুলো চালু করা যাবে। চালু হবে বিউটি স্যালুন এবং হেয়ার ড্রেসার গুলো। সর্বে্চ্চা ১৫ জন শিশু ইনডোর ক্রীড়াকর্মে অংশ নিতে পারবে। অভিভাবকরাও তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারবেন। খুলে দেয়া হবে চিড়িয়াখানা, থিম পার্ক এবং ড্রাইভ ইন সিনেমা। খুলবে লাইব্রেরি এবং কমিউনিটি সেন্টার। বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে ১৫ জন।

১৭ মে
লকডাউন অবসানের তৃতীয় ধাপ শুরু হবে ১৭ মে। এ ধাপে বাইরে সর্বোচ্চ ৩০ জন একত্রিত হতে পারবে। ইনডোরে দুই পরিবারের ৬জন মিশতে পারবে। বিয়ে কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে ৩০ জন। অন্যান্য আউটডোর এন্টারটেইনম্যান্ট যেমন সিনেমা এবং থিয়েটার চালু হবে পুরোদমে। একই সঙ্গে সিনেমা, জাদুঘর, চিলড্রেন প্লে এরিয়াগুলোও চালু হবে। সীমিত পরিসরে চালু হবে আবাসিক হোটেল। সাংস্কৃতিক আয়োজনের মত সরাসরি অনুষ্ঠানগুলো শুরু করা যাবে। এক্ষেত্রে ইনডোর অনুষ্ঠানে বা স্পোর্টিং ইভেন্টে যথাক্রমে সর্বোচ্চ এক হাজার এবং আউটডোর অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৪ হাজার লোকের ভেন্যুতে উপস্থিতির সীমা অর্ধেক পর্যন্ত নির্ধারিত থাকবে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের বিধিনিষেধও তুলে দেয়া হবে এ সময়। প্রাপ্ত বয়স্কদের ইনডোর গ্রুপ স্পোর্টস এবং এক্সারসাইজ ক্লাস চালু করা যাবে। তবে এর সাথে শর্ত হলো যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয়।

২১ জুন
পরিকল্পনা অনুযায়ী লকডাউন তোলার সর্বশেষ ধাপ অর্থাৎ চতুর্থ ধাপ শুরু হবে ২১ জুন। এ সময় মূলত লকডাউন বা সোশ্যাল ডিসটেনসিংয়ের আর কোনো নিয়ম কানুন বহাল অবশিষ্ট থাকবে না। নাইটক্লাব থেকে শুরু করে, ইচ্ছামত যে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিতি-সবকিছু চলবে স্বাভাবিক নিয়মে। মূলত ২১ জুন থেকে যুক্তরাজ্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে এমনটাই প্রত্যাশা। বিয়েশাদী বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে সকল বাধা তুলে নেয়ার ব্যাপারেও নির্দেশিকা দেয়া হবে।

চারটি শর্ত
লকডাউন অবসানের এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়টি চারটি শর্তের ওপর নির্ভর করবে। এই চারটি শর্ত হলো- (১) করোনার টিকাদান কর্মসূচি পরিকল্পনা মাফিক এগুতে হবে। (২) টিকাদানের ফলে করোনায় মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা পর্যাপ্তহারে কমতে হবে। (৩) সংক্রমণের পরিমান যাতে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি না করে। (৪) করোনার নতুন কোনো জাত যেন পরিস্থিতি খারাপ না করে।
এ চারটি শর্ত পূরণ হলে তবেই লকডাউন তোলার এক ধাপ থেকে পরবর্তী ধাপে যাওয়া যাবে। টিকাদান কর্মসূচির সফলতার ফলে পরিস্থিতি ভালোর দিকে এগোবে এবং ২১ জুনেই যুক্তরাজ্য করোনা পরবর্তী যুগে পা রাখবে বলে প্রত্যাশা।

লকডাউন : দুই রেষ্টুরেটার্সের সাম্প্রতিক ভাবনা

মহিদ মিয়া

স্টাফোর্ডশায়ারের একলসলে লন্ডন হাউস নামের রেষ্টুরেন্ট রয়েছে মহিদ মিয়ার। ভিলেজে রেষ্টুরেন্ট থাকায় কাস্টমাররাও খুব লয়্যাল। বর্তমান সরকারের বিজনেস প্যাকেজগুলো নিয়ে প্রশংসাসুচক কথা বললেন মহিদ মিয়া। রিশি সোনাকের সর্বশেষ প্যাকেজও অন্ততপক্ষে কিছুটা সাহায্য করবে হসপিটালিটি সেক্টরকে। তিনি বলেন,সরকার এই মাহামারী কালে যে সকল প্রণোদনা দিয়েছে সুষ্টুভাবে ম্যানেজ করেছেন যারা তাদের কোন শংকার কারণ দেখছিনা। কমসুদে বাউন্সব্যাক লোন, অনুদান, বিজনেস রেইট মুওকুফ, স্টাফদের ফারলো, ভিএটি ৫% এগুলো কম কথা নয়। তিনি বলেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই কারি ইন্ডাষ্ট্রি সাফার করেছে, আমরা জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করেছি কিন্তু নিজেদের ব্যবসা বাঁিচয়ে রাখার জন্য আমরা তা করেছি। ব্যবসা পরিচালনায় আমাদের নিজস্ব একটি পদ্ধতি রয়েছে। স্বাভাবিক সময়েও সংগ্রাম করে আমাদের কর্মসংস্থান ঠিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি। আর এটাতো  অস্বাভাবিক সময়। মহিদ মিয়া বলেন, এই সময়ে যারা কষ্ট করে ব্যবসায় ঠিকে থাকবেন তারা এই বড় দুর্যোগ কাটিয়ে উঠলেন আমি এটাই মনে করি।
মহিদ মনে করেন যেভাবে দ্রুত ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে এতে ইতোমধ্যেই মানুষের মধ্যে একটা আস্থা ফিরে পাবার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জানান, গত বছরের মাঝামাঝি সময় ও প্রথম লকডাউনে ব্যবসা ভালই করেছেন। সরকারের ইট আউট টু হেল্প আউট স্কীমও বেশ উপকারে এসেছে। তিনি বলেন, ব্যবসাগুলোকে ঠিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের উদ্যোগ গুলো অতুলনীয়। আগামী ১৭ মে রেষ্টুরেন্ট খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মহিদ মিয়া।

আকতরাজ মিয়া

লকডাউন উঠে গেলে ব্যবসার ভবিষ্যত কি হবে এ নিয়ে কারি লাইফ এর সাথে কথা বলেন আকতরাজ মিয়া। কারি রেষ্টুরেন্টগুলো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে এ ব্যাপারে সম্পুর্ণ আশাবাদী তিনি। ব্যবসা ও নিজের প্রতি কমিটেড থাকলে চিন্তার কোন কারণ নেই। যারা এই লকডাউনে ব্যবসা চালু রাখার জন্য শতভাগ আগের মতোই কাজ করেছেন তাদের ব্যবসায় কোন প্রভাব পড়েনি। এর অন্যতম কারণ হলো ব্যবসা একটু কম হলেও সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে তা ব্যবসা গুলোকে টিকিয়ে রেখেছে বলে মনে করেন তিনি। আকতরাজ মিয়া তার ব্যবসার উদাহরণ দিয়ে বলেন, কাস্টমারদের ভেতরে খাওয়াতে না পারলেও ভাল টেকওয়ে ব্যবসা করেছেন। ব্যবসার পরিমাণ আগের চেয়ে কিছুটা কম হলেও স্টাফ যারা কাজে আসেননি তাদের ফারলো পাওয়া, সরকারী অনুদান এবং হ্রাসকৃত হারে ভিএটি খুবই সাহায্য করেছে। বাকিংহ্যামশায়ারের প্রিন্সেস রিজবরোর রাধুনি রেষ্টুরেন্ট এমনি স্থানীয়দের কাছে খুবই জনপ্রিয় এবং সাজ সজ্জার দিকে আধুনিক। আকতরাজ মিয়া জানান, যেহেতু রেষ্টুরেন্ট খোলা নেই তাই সামনের স্টাফরা ফারলোতে আছেন কিন্তু তার কিচেনের ৬ জন স্টাফই ফুলটাইম কাজ করছেন। আকতরাজ মিয়া বলেন, কাজের ধরণ ও পরিবর্তন হয়েছে, মাত্র কয়েক ঘন্টার কাজ। টেকওয়ের রাশ থাকে সন্ধ্যার দিকে মাত্র কয়েক ঘন্টা আর এটা ভালভাবে যারা ম্যানেজ করছেন, বিশেষ করে খাবারের মান উন্নত রাখছেন তারাই কিন্তু এই মহামারীতেও ভাল ব্যবসা করেছেন। আকতরাজ মিয়া ১৭ মে লকডাউন খোলার অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি বলেন, ইন্ডাষ্ট্রির অনেকগুলো এওয়ার্ড হয় যা আমরা আনন্দের সাথে উপভোগ করি। আমরা এক বছর যাবত এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত। এবার ‘আই এম লুকিং ফরওয়ার্ড টু কারি লাইফ এওয়ার্ড।’

Share it in social media


আরও খবর