কারি শেফ ম্যাগাজিন ও কারি লাইফ শেফ ক্লাব এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

 

কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপ এর বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম ম্যাগাজিন কারি শেফ এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো ২২ জুলাই বুধবার পূর্ব লন্ডনে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে। কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপের চতুর্থ প্রকাশনা হচ্ছে কারি শেফ ম্যাগাজিন।গ্রুপের প্রথম প্রকাশনা হচ্ছে বর্তমানে যুক্তরাজ্যের একমাত্র জনপ্রিয় ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট ম্যাগাজিন ‘কারি লাইফ’, যা ব্রিটেনের সকল উপমহাদেশিয় খাবারের রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়েতে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। কারি শেফ ম্যাগাজিনও প্রতি দুই মাস অন্তর যুক্তরাজ্যের সকল ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশি রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়েতে বিনামূল্যে ডাকযোগে পাঠানো হবে। এতে প্রকাশিত সংবাদ, ফিচার, পর্যালোচনা ও বিভিন্ন ধরণের লেখা ইত্যাদি হবে কারি লাইফ থেকে ভিন্ন। তবে ইন্ডাষ্ট্রি সম্পর্কিত কিছু খবরা খবরে সামান্য মিল থাকবে। থাকবে বাঙালিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই কারি ব্যবসার নানা কাহিনী, কিভাবে এই ব্যবসা হাটি হাটি পা পা করে যুক্তরাজ্যে বিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। ইন্ডাষ্ট্রির নানা সংকট, সমাধান, রাজনীতি ও আত্মসমালোচনামুলক নিবন্ধ থাকবে এতে। এই ম্যাগাজিনে পাঠকরা বিশেষ করে রেষ্টুরেটার্স এবং ইন্ডাষ্ট্রির সাথে সম্পৃক্তরাও কারি শিল্প নিয়ে লিখতে পারবেন এই ম্যাগাজিনে। থাকবে এই শিল্পের ‘যুবরাজ’ শেফদের কথা এবং প্রবীণ এন্ট্রেপ্রোনার যারা এখনো বেঁচে আছেন তাদের পুরানো দিনের কাহিনী।
কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপের যাত্রা শুরু হয় সতেরো বছর পূর্বে কারি লাইফ ম্যাগাজিন প্রকাশনার মাধ্যমে। দ্বিমাসিক এই ম্যাগাজিন প্রথম দিকে দ্বিভাষিক ছিল। পরবর্তীতে তা সম্পুর্ণটাই ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত হতে থাকে এবং যারা কারি ইন্ডাষ্ট্রির হাজার হাজার রেষ্টুরেন্টে তাদের পণ্য ও সেবা বিক্রি করছেন সেসব সাপ্লায়ার এবং রেষ্টুরেন্টের কাস্টমারদের কাছেও সেটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপের চারটি প্রকাশনা হলো কারি লাইফ, ওরিয়ে়ন্টাল ফুড লাইফ, ট্রেভেল লাইফ ও সর্বশেষ সংযোজন কারি শেফ ম্যাগাজিন। ওরিয়ে়ন্টাল ফুড লাইফ ম্যাগাজিন যুক্তরাজ্যের হাজার হাজার চায়নীজ, থাই, ভিয়েতনামিজ ও টার্কিশ রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়েতে বিনামূল্যে ডাকযোগে পাঠানো হয়। ট্রেভেল ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্যে রয়েছে ট্রেভেল লাইফ। এই দুটি ম্যাগাজিনই ত্রৈমাসিক।
কারি লাইফ মিডিয়ার প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, এই পান্ডেমিকের ফলে মিডিয়ার মোড় যখন অন্যদিকে ঘুরছে অর্থাৎ ভুরি ভুরি অনলাইন টিভির উদয়, নিম্নমুখি প্রিন্ট মিডিয়া ও মেইনষ্ট্রীম টিভি যখন চাপের মুখে তখন কারি লাইফ গ্রুপের নতুন একটি ম্যাগাজিন প্রিন্ট এডিশন বের করা দুঃসাহসই বলা চলে। আমরা দীর্ঘদিন থেকে বাংলা ভাষায় একটি ম্যাগাজিন প্রকাশের চিন্তাভাবনা করছি। এনিয়ে় একটি মিনি জরীপও পরিচালনা করেছি। আমরা মনে করি আমাদের বাঙালিদের দ্বারা পরিচালিত এই রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায় এখনো একটি বিরাট সংখ্যক বাংলাভাষী পাঠক রয়েছে। তারা ইন্ডাষ্ট্রির সংকট, রাজনীতি, নতুন প্রডাক্ট ইত্যাদি খবরা খবর নিজের ভাষায় বিস্তারিত জানতে চান। আমরা সে ব্যবস্থাটাই তাদের জন্য করে দিচ্ছি যেখানে তারাও নিজেদের অভিমত নিয়ে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন, লিখতে পারবেন। তিনি বলেন, কারি লাইফ গ্রুপের কিছু সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষক রয়েছেন এবং ম্যাগাজিনের হাজার হাজার পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী রয়েছেন তাদের কাছে আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। সৈয়দ নাহাস পাশা জানান, এখন থেকে হাজার হাজার ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশি রেষ্টৃরেন্ট ও টেকওয়ে় প্রতিমাসেই পোষ্টে একটি করে ম্যাগাজিন পাবেন। এক মাসে কারি লাইফ ও পরবর্তী মাসে কারি শেফ। এতে করে ইন্ডাষ্ট্রির সব খবরাখবর সম্পর্কে তারা প্রতিমাসেই হালনাগাদ থাকবেন।
কারি লাইফ মিডিয়ার সম্পাদক, সৈয়দ বেলাল আহমদ বলেন, কারি লাইফ এর যাত্রা শুরু হয়েছিল শেফদের ওপর ফোকাস করে। এরও আগে ২০০২ সালে ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশ ফিউশন ফুড ফেষ্টিভ্যাল’ এর মাধ্যমে আন্তজার্তিকভাবে শেফদের প্রমোট করা শুরু করি আমরা। পরবর্তীতে টেইষ্ট অব ব্রিটেন কারি ফেষ্টিভ্যালের মাধ্যমে শতাধিক শেফকে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ে ফাইভ স্টার হোটেলের সাথে পার্টনারশীপ করে তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছি। মূলধারার মিশেলিন স্টার শেফদের সাথে কাজ করা এবং তাদের রেষ্টুরেন্টে কাজের সুযোগ করে দিয়েছি। ইন্ডাষ্ট্রিতে শেফদের জন্য প্রথম সম্মাননা অনুষ্ঠান ‘কারি লাইফ শেফ এওয়ার্ড’ চালুর মাধ্যমে আমরা মনে করি ইন্ডাষ্ট্রির ইমেজ বৃদ্ধিতে যথেষ্ট অবদান রেখেছি। যদিও অনেকেই পরবতীর্তে আমাদের পথ অনুসরণ করেছেন। কারি শেফদের “যুবরাজ” উপাধি দিয়েছি। আর এই যুবরাজদের নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন দেখতে পাবেন কারি শেফ ম্যাগাজিনে। আমরা এই শেফদের সংগঠিত করা ও তাদের দক্ষতাকে অন্য স্তরে নেয়ার জন্য কারি লাইফ শেফ ক্লাবকে আরও শক্তিশালি করছি। কারি লাইফ শেফ ক্লাব এর যারা সদস্য হবেন তারা নানা সুবিধা পাবেন এবং শেফদের নিয়ে আমাদের নতুন কিছু পরিকল্পনা রয়েছে ।
কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপ চারটি ম্যাগাজিন প্রকাশ ছাড়াও দেশে বিদেশে নানা অনুষ্ঠান করে থাকে। এই গ্রুপের ফ্ল্যাগশীপ অনুষ্ঠান হলো কারি লাইফ এওয়ার্ড। ১১তম কারি লাইফ এওয়ার্ড এ বছর অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ ই নভেম্বর রোববার ২০২০ (সরকারের নির্দেশিকা সাপেক্ষে) । এছাড়া কারি লাইফ কালিনারী ওয়ার্কশপ, টেইষ্ট অব ব্রিটেন কারি ফেষ্টিভ্যাল, ওয়ার্ল্ড কারি এক্সপো ও নানা নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রিটিশ কারি ইন্ডাষ্ট্রিতে সচল রয়েছে কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপ। সম্প্রতি রেষ্টুরেন্ট ও টেকওয়েসহ বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে সহযোগিতা করার জন্য “সিম্পলি সোশ্যাল” নামে একটি নতুন কোম্পানীও চালু করেছে এই মিডিয়া গ্রুপ।
পূর্ব লন্ডনের একটি রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠানে কারি লাইফ শেফ ক্লাবের নতৃবৃন্দ ও সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শেফ আবুল মনসুর, শেফ সৈয়দ জহরুল ইসলাম, শেফ আব্দুল হাই, শেফ মাইদুল রুহেল, শেফ মোহাম্মদ আলী ও শেফ বিজয় সিং পানওয়ার । এছাড়া কারি লাইফ গ্রুপের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্পন্সর ও কারি শেফ ম্যাগাজিনের বাণিজ্যিক উপদেষ্টা এমদাদুল হক টিপু ও ম্যাগাজিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Share it in social media


আরও খবর